ডাবের পানির উপকারিতা - টানা ৭ দিন ডাবের পানি খেলে কি হয়

হাসির ডিম খেলে শরীরের প্রভাব আজকে আমাদের আর্টিকেল এর বিষয় হচ্ছে ডাবের পানির উপকারিতা সম্পর্কে। আমরা যে ডাবের পানি খেয়ে থাকি তা তো খুবই সুস্বাদু কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা পেটের উপকারিতা সম্পর্কে। তাই আপনি যদি জানতে চান তাহলে পোস্টটি পুরোটা পড়বেন।
ডাবের পানির উপকারিতা


এখানে আপনি আরো জানতে পারবেন টানা ৭ দিন ডাবের পানি খেলে কি হয়। ডাবের পানি কোন সময় খেলে আপনার সুবিধা বেশি।

ভূমিকা

আমরা এখন কথা বলছি ডাবের পানিতে প্রচুর পরিমাণে ইলেক্ট্রোলাইটের থাকে যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ডাবের পানি সকালে পান করা ঘুমানোর আগে পান করার থেকে সুবিধা জনক। ডাবের পানি গর্ভাবস্থায় পান করা নিরাপদ। ডাবের পানি রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে এবং ডাবের পানির সঙ্গে রক্তচাপ কমানোর ওষুধ অনেক কমাতে পারে। ডাবের পানি পান করলে ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে।

সকালে খালি পেটে ডাবের পানি খেলে কি হয়?

মানুষ যদিও যেকোনো দিনের যেকোন সময় ডাবের পানি উপভোগ করতে পারে, তবে নির্দিষ্ট সময়ে ডাবের পানি সহায়ক বলে প্রমাণিত হয়েছে। খালি পেটে ডাবের পানি খাওয়ার কারণ এটি হতে পারে যে ডাবের পানি খেলে অনাক্রম্যতা বাড়াতে,ওজন কমাতে এবং বিপাককে সাহায্য করতে সাহায্য করে।
আবার সকালে খালি পেটে ডাবের পানি খেলে হাইড্রেশন,পুষ্টির বৃদ্ধ,হজম সহায়ক,ওজন ব্যবস্থাপনা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

হাইড্রেশনঃ নারিকেল পানির ভিতরে রয়েছে ইলেক্ট্রোলাইটের একটি প্রাকৃতিক উৎস যেটা আমাদের ঘুমের পরে পুনরায় হাইড্রেড হতে সাহায্য করে।

পুষ্টির বৃদ্ধিঃ ডাবের পানিতে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম,ভিটামিন এবং পটাসিয়াম এর মতো পুষ্টি থাকায় তা আমাদের শক্তি দিতে সাহায্য করতে পারেন।

হজমঃ ডাবের পানিতে রয়েছে উচ্চ ফাইবার যা হজমে সাহায্য করে কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে এটিতে আরো রয়েছে এনজাইম যা আমাদের শরীরের প্রাকৃতিক হজম প্রক্রিয়াগুলিকে সাহায্য করে।

ওজন ব্যবস্থাপনাঃ ডাবের পানিতে ক্যালরি কম থাকায় আপনি চিনি যুক্ত পানীয় বা জুস এর পরিবর্তে পান করতে পারেন।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাঃ ডাবের পানিতে রয়েছে লরিক অ্যাসিড যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

ডাবের পানি খেলে কি কি উপকার হয়?

ডাবের পানিতে প্রচুর প্রাকৃতিক ইলেক্ট্রোলাইট থাকে যা হলো ম্যাগনেসিয়াম,সোডিয়াম,ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়াজ। ইলেক্ট্রোলাইট আমাদের শরীরে পানির পরিমাণ এর ভারসাম্য ঠিক রাখার জন্য প্রয়োজনীয়
খনিজ পদার্থ, কোষের ভিতরে এবং বাইরে বর্জ্য স্থানান্তরিত করে, পেশী ও স্নায়ুর কার্যকারিতায় সাহায্য করে এবং রক্তচাপ স্থিতিশীল করে থাকে।
অনেক সময় প্রচুর কাজ করার পর বা প্রচুর পরিমাণে তরল হারানোর কারণে শরীরে ইলেক্ট্রোলাইট এর ভারসাম্যহীন হয়ে যেতে পারে।এই কারণেই স্পোর্টস পানি সমূহ এত বেশি জনপ্রিয়।ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য হারাতে পারে যখন আমাদের শরীরে পানির পরিমাণ পরিবর্তন হয়।কারণ হতে পারে বমি বা ডায়রিয়া।

বেশিরভাগ স্পোর্টস ড্রিঙ্কের তুলনায় ডাবের পানিতে চিনির পরিমাণ কম থাকে আর এতে কার্বোহাইড্রেট থাকে যেগুলো আমাদের শরীরের কর্ম ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। গবেষণায় আরো জানা গেছে যে ডাবের পানিতে উচ্চত ইলেক্ট্রোলাইট থাকার কারণে ব্যায়ামের পর রিহাইড্রেট খাওয়ার জন্য সাধারণ পানি তুলনায় ডাবের পানি বেশি উপকারী।

গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খেলে কি হয়?

গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি নিরাপদ এবং সতেজ পানীয় হতে পারে।কারণ এতে ইলেক্ট্রোলাইট এবং পুষ্টি রয়েছে। ডাবের পানি দিয়ে যে বিষয়ে সাহায্য করতে পারে তা হলোঃ
  • হাইড্রেশনঃ ডাবের পানিতে রয়েছে ৯৫% পানি এবং ৫% অন্যান্য প্রয়োজনে উপাদান।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাঃ পাচক স্বাস্থ্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করতে সাহায্য করতে পারে।
  • ব্যায়াম-পরবর্তী পানীয়ঃচিনি যুক্ত স্পোর্টস ড্রিংকগুলির তুলনায় ডাবের পানি একটি ভালো বিকল্প।
  • উচ্চ রক্তচাপঃ উচ্চ রক্তচাপ কমাতে ডাবের পানি সহায়তা করতে পারো।
  • মূত্রনালীর সংক্রমণ (UTIs) ঃ UTIs প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে।
  • কিডনি ফাংশনঃ কিডনি ফাংশন উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।
  • প্রাতঃকালীন অসুস্থতাঃ গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসে ডাবের পানি খাওয়া সকালের অসুস্থতা ও ক্লান্তি দূর করতে সহায়তা করে।
  • হজম স্বাস্থ্যঃ ডাবের পানি কোষ্ঠকাঠিন্য,অলস হজম এবং বুকজ্বালায় সাহায্য করতে পারে।

ডাবের পানি খেলে কি রক্তচাপ বাড়ে?

প্রাথমিক গবেষণায় জানা গিয়েছে ডাবের পানি খেলে রক্তচাপ বাড়ে না কিন্তু রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে। আবার আপনি যদি ডাবের পানির সাথে রক্তচাপ কমানোর ওষুধ একসাথে খান তাহলে এটি আপনার রক্তচাপ প্রচুর কমাতে পারে।

ডাবের পানিতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে যা কিডনি কে সাহায্য করে শরীর থেকে উচ্চ সোডিয়াম এর মাত্রা দূর করতে। আমাদের আরো জানতে হবে যে ডাবের পানিতে সোডিয়াম রয়েছে যা রক্তচাপ বাড়াতে পারে।

যাইহোক অনেকে বলে ডাবের পানিতে উচ্চ সোডিয়াম থাকায় যেকোনো উচ্চ রক্তচাপ ব্যক্তিদের ডাবের পানি খাওয়া উচিত নয় কারণ সোডিয়াম রক্তচাপ বাড়াতে সাহায্য করে। অথচ রক্তচাপ কমানোর ওষুধের সঙ্গে ডাবের পানি খেলে রক্তচাপ খুবই কমে যায়। 

দোকান থেকে ডাবের পানিতে কিনতে পাওয়া যায় সিটিতে ৩০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম এবং ৪ ৭০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম থাকে।

ডাবের পানি কখন খাওয়া ভালো?

এমনি ডাবের পানি তো সবসময় খাওয়া যায় কিন্তু কিছু মানুষ বলে ডাবের পানি সকালে খালি পেটে খাওয়া ভালো কারণ এটি ওজন কমাতে সাহায্য করে। ডাবের পানি কখন খেলে কি হয় নিজে তা লেখা হলোঃ
  • খাওয়ার আগেঃ ডাবের পানি খাবার খাওয়ার আগে পান করলে আপনার পেট ভর্তি মনে হবে এবং অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত রাখবে।
  • সকাল বা দুপুরঃ আপনি যদি এই সময় ডাবের পানি পান করেন তাহলে আপনার বদহজম হওয়া থেকে বিরত রাখবে এবং আপনার শরীরে ভিটামিন এবং খনিজ শোষণ করতে সাহায্য করবে।
  • ওয়ার্কআউট এর আগে বা পরেঃ ওয়ার্কআউট করার পূর্বে এবং পরে ডাবের পানি খেলে আপনার শরীর হাইড্রেটের থাকবে।
  • ঘুমানোর আগেঃ ঘুমানোর আগে ডাবের পানি পান করলে আপনার শরীরকে হাইড্রেশন এবং হ্যাংওভারে সাহায্য করবে।
  • গর্ভাবস্থাঃ গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি পান করলে ডিহাইড্রেশন,মর্নিং সিকনেস,বুকজ্বালায় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য এগুলোর বিরুদ্ধে সাহায্য করতে পারেন।

ডাবের পানি খাওয়ার নিয়ম

ডাবের পানির দিনের কোন সময় খাওয়া যায়। রাত্রে ডাবের পানি খেলে ডাবের গুন গুলো কতটা কার্যকর হয় না তাই সকালে ডাবের পানি পান করা সঠিক সময় হতে পারে। কারণ তা মেটাবলিজম ওজন কমানো এবং অনাক্রম্যতা বিষয়ে সাহায্য করতে পারে। আবার অনেকে বলে যে ঘুমানোর আগে ডাবের পানি পান করলে ঘুম ব্যাহত হয়।

ডাবের পানি খাওয়ার কিছু টিপস নিচে দেওয়া হলওঃ

ফ্রিকোয়েন্সিঃ কেউ কেউ ডাবের পানি প্রতিদিন এক থেকে দুই কাপ করে খায় আবার অনেকে দৌড়ানোর পরে পান ক।

স্বাদঃ আপনি যদি ডাবের পানির সর্বাধিক সুবিধা পেতে চান তাহলে আপনি অতিরিক্ত স্বাদ ও চিনি মুক্ত প্রাকৃতিক ডাবের পানি পান করবেন।

দিনের সময়ঃ ডাবের পানি সকালে বা বিকালে পান করতে পারেন কিন্তু ঘুমানোর আগে নয়। আবার সন্ধ্যায় পান করলে বদহজম হতে পারে।

স্বাস্থ্যের অবস্থাঃ যাদের ডায়াবেটিস,কার্ডিওভাসকুলার রোগ,দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ,ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্যহীনতা বা নারকেল জলের প্রতি সংবেদনশীলতাযুক্ত ব্যক্তি তাদের ডাবের পানি খাওয়ার আগে একটি ডাক্তারের বা পুষ্টি বিশেষজ্ঞের থেকে পরামর্শ নিতে হবে।

লেখকের মন্তব্য

আমাদের মতে আপনার সকালে ডাবের পানি পান করা সবচেয়ে লাভবান হতে পারে আর যদি আপনি খালি পেটে পান করেন তাহলে আরো লাভবান হবেন। যেহেতু ডাব যে কোন সময় খাওয়া যায় তাই আপনার পোস্টটি পড়ে যে সময় পান করতে বেশি সুবিধাজনক মনে হয় তখন পান করবেন।আর আপনার যদি পুরো পোস্টটি পড়ে কিছু নতুন জানতে পেরেছেন তাহলে অবশ্যই একটি কমেন্ট এবং পোস্টটি শেয়ার করে দিবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url